সভাপতির কথা

সাংবাদিকতা মর্যাদাশীল ও সম্মানজনক পেশা। সাংবাদিকদের সম্মানের কথা বিবেচনা করে স্বাধীনতার কয়েক বছর পরই ১৯৭৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি গেজেটের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেন্‌। এই আইনেই সবচেয়ে বড়দিক হলো-কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পেশাগত অসদাচরণ বা সাংবাদিকতার নীতিমালার বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি ‘তিরস্কার’ বা ‘সতর্ক’ করার বিধান।অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকতা পেশাকে এতো বেশি সম্মানের চোখে দেখতেন যে, তিনি কখনো চান নি অপরাধের জন্য সাংবাদিক জেল খাটুক। সাংবাদিকের জন্য তিরস্কারই যথেষ্ট শাস্তি মনে করনে তিনি।

কিন্তু পরবর্তী সময়ের সরকারগুলো নানাভাবে চেষ্টা করেছে সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণে রাখার। নানা কৌশলে সাংবাদিকদের পেশাগত দাবি-দাওয়া ও অধিকার দাবিয়ে রাখা হয়েছে। তবে  নিয়োগপত্র ও বেতন-ভাতাসহ নানা দাবিতে বিভিন্ন সময়েই সোচ্চার থেকেছে সাংবাদিক সংগঠনগুলো।

তবে শ্রম আইন অনুযায়ী সাংবাদিকরা শ্রমিক। তাই শ্রম অধিদপ্তরের ট্রেড ইউনিয়ন শাখার রেজিস্ট্রেশন নিয়ে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে গড়ে ওঠে সাংবাদিক ইউনিয়ন।এ সংগঠনটির প্রধান লক্ষ্যই হলো সাংবাদিকদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বা ন্যায্য অধিকার আদায়ে নেতৃত্ব দেয়া। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৭ সালে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন-আরইউজে গঠিত হয়। যার রেজিস্ট্রেশন নং ১০৮৮। ইউনিয়ন মানেই শ্রম আইনে দেয়া অধিকার আদায়ে সচেষ্ট থাকা। তাই সংগঠনের লক্ষ্য পূরণে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কাজ করে যাচ্ছে।

২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচিত বর্তমান কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করার পরই আরইউজেতে গতি ফেরে। প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধাসহ একটি কার্যালয় পেয়েছে ইউনিয়ন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ঘোষিত সকল কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।পাশাপাশি স্থানীয় সাংবাদিকদের পেশাগত অধিকার আদায়েরও একমাত্র ঠিকানায় পরিণত হয়েছে আরইউজে। সাংবাদিকদের নানা সমস্যা ও সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়িয়েছে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের আর্থিক সমস্যার কথা বিবেচনা করে কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেন। এই ট্রাস্ট্রের আওতায় প্রতি বছরই আরইউজে’র পক্ষপাতহীন সুপারিশে উপযুক্ত সদস্যরাই এর সুবিধা ভোগ করছেন। এছাড়া আরইউজে’র নিজস্ব তহবিল থেকে প্রতিনিয়তই অস্বচ্ছল সাংবাদিকদের নানাভাবে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে থেকে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট-পিআইবিসহ সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সাংবাদিকদের নিয়মিত প্রতিশিক্ষণের ব্যবস্থা হয়। এসব উদ্যোগ সফলভাবে সম্পন্ন করা যাচ্ছে সদস্যদের আন্তরিকতা ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার কারণেই। ফলে রাজশাহীর মূলধারার সাংবাদিকদের প্রাণের সংগঠনে পরিণত হয়েছে আরইউজে।

পরিশেষে বলতে চাই, লক্ষ্য বাস্তবায়নে আরইউজে সব সময়ই অবিচল। সাংবাদিবকদের অধিকার আদায়ে ও পেশার উৎকর্ষ সাধনে সর্বদাই সচেষ্ট থাকবে আরইউজে। একইসাথে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে সাংবাদিক ইউনিয়ন।



মো. রফিকুল ইসলাম
সভাপতি,
রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন।